নুসরাত পাইরিন,কক্সবাজার :

সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা।এই পেশায় সম্মানের পাশাপাশি আছে রোমাঞ্চ। রয়েছে ভালো লাগা, ভালোবাসা সর্বোপরি একটি স্বাধীনতা। সাংবাদিকতা কোন সাধারণ পেশা নয়। এই নেশায় যেমন রয়েছে অধিক সম্মান তেমনী রয়েছে জীবনের মারাত্মক ঝূঁকি। এই নেশাটা হচ্ছে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কিছু করার নেশা। আমার মনে হয়, একজন চিকিৎসক যেভাবে মানুষের সেবা করতে পারেন তার চেয়ে অনেক বেশি সেবা করতে পারেন একজন দেশপ্রেমিক সাংবাদিক। কিন্তু জীবনের ঝূঁকি নিয়েই সাংবাদিকরা সমাজের অন্যায়, অবিচার, অনিয়ময়, দূর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন গণমাধ্যমে। যখনই একজন অপরাধীর ঘৃন্য কর্মকান্ড গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় তখনই প্রতিবেদক হুমকির শিকার হন। তবে এরকম আমার বেলায় এখনো হয়নি। আমিও অনিয়মের বিরুদ্ধে কলম ধরতে শিখেছি। অনেক ব্যস্ততা,লেখাপড়া মাথায় নিয়ে কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন) এ কাজ করে যাচ্ছি। এরপরও কি থামা যায়! সকল ব্যস্ততাকে দূরে ঠেলে দিয়ে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে হয়।

জনগন রাষ্ট্র ও গণমাধ্যম একে অপরের অঙ্গ। গণমাধ্যম ছাড়া কোন রাষ্ট্র স্ব নীতির উপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা। তাই গণমাধ্যমকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। গণমাধ্যমকে কন্ঠরোধ করা হলে নাগরিকরাই অধিকার বঞ্চিত হন।ছোট বেলা থেকেই অধিকার বঞ্চিত মানুষের দিকে যখন থাকাতাম তখন মনের মধ্যে একটি প্রশ্ন জাগতো কিভাবে তাদের অধিকার পাওয়া যাবে। তখনই জানতে পারলাম গণমাধ্যমের মাধ্যমে মানুষের অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখা সম্ভব। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম কোন একটি অনলাইন পোর্টালে কাজ করার। এই সিদ্ধান্ত থেকেই শুরু হলে শখের সাংবাদিকতা। ২০১৭ সালে ১০ সেপ্টেম্বর দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত থাকা অবস্থায় কক্সবাজার থেকে সর্বপ্রথম জন্ম নেওয়া কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রিয় শিক্ষক আকতার চৌধুরী স্যারের সম্পাদিত কক্সবাজার নিউজ ডটকম ( সিবিএন) এ টুকটাক সংবাদ পাঠানো শুরু করি। অনলাইনটির সম্পাদক শ্রদ্ধেয় আকতার স্যারের সরাসরি ছাত্রী হিসাবে ভুলে ভরা আমার লেখা সংবাদ গুলো শুদ্ধ করে আপডেট দিতো অনলাইনে।তিনি নারী সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করতেন । সিবিএন এ প্রকাশিত আমার সংবাদগুলো স্থানীয় দু’ একটি দৈনিকে আমার ক্রেডিটে প্রকাশিত হত।এ গুলো পরদিন দেখলে আত্মতৃপ্তি পেতাম। এ অনলাইনটাতে কাজ করতেছি শখের বসে।তবে সাংবাদিকার সাইনবোর্ড দিয়ে আর্থিক কিংবা অন্য সুবিধা আদায় করতে এ পেশায় আসি নাই।অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এসেছি।

এ পেশায় আসার পর অনেকেই খারাপ মন্তব্যও করতে শুনেছি।তারপরও হাল ছাড়ি নাই।চলছি নিজের গতিতে।এমন সময়ে আমাকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ, দিকনির্দেশনা ও উৎসাহ দিয়েছেন আকতার স্যার, স্যারের স্ত্রী,পরিবারের অপরাপর সদস্যসহ পরিচিত অনেকেই। মুলত তাদের উৎসাহ পেয়েই শখের সাংবাদিকতা থেকে অনেকটা পেশায় রূপ ধারণ করে। বড় ভাইদের উৎসাহে এখনো সাংবাদিকতায় মজা পাই। আমার পাঠানো যেকোন সংবাদ স্যার খুবই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে। সবদিক দিয়ে বলা যায়, সাংবাদিকতা শুধূ কোন  চাকরি কিংবা পেশা নয়,এটি এক ধরনের ভালো লাগা এক নেশা। পৃথিবীর আর কোন পেশাতেই এতো স্বাধীনতা ও মানুষের জন্য কিছু করার এমন সুযোগ নেই। আর তাই সাংবাদিকতা ছেড়ে কেউ শিক্ষক, পুলিশ কিংবা প্রশাসনের বড় কর্তা হওয়ার পরেও কারো কারো এই পেশার প্রতি টান থেকে যায়। এ কারণে অনেকে ভালো চাকরী ছেড়েও আবারো ফিরে আসেন সাংবাদিকতায়। আমিও নেশা হিসেবে আজীবন সংবাদের সাথে যুক্ত থাকতে চাই। মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই। সহযোগিতা,পরামর্শ, দিক নির্দেশনা চাই সকলের কাছে। সকলের কাছে দোয়া চাই যেন নেশাটা থাকুক আজীবন আর এই নেশা ছড়িয়ে পড়ুক সব সংবাদকর্মীর মধ্যে। তবেই জাগ্রত হবে প্রকৃত সাংবাদিকতা।

লেখকঃ প্রতিনিধি, কক্সবাজার নিউজ ডটকম ও শিক্ষার্থী কক্সবাজার সিটি কলেজ।